প্রতিপ্রহর বিশেষ প্রতিবেদনঃ
ইঞ্জিঃ খশরুল আলম পলাশ
নড়াইল-যশোর মহাসড়কে সড়ক দূর্ঘটনায় গত আড়াই বসরে প্রানহানী হয়েছে ৪২ জনের, অঙ্গহানী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন কমপক্ষে ১৪২ জন।

রাজধানী ঢাকার সাথে বেনাপোল স্থল বন্দর সহ দক্ষিনবঙ্গের সড়ক পথের অন্যতম ব্যস্ততম এই সড়কে অতি অল্প সময়ে আশংখাজনক সংখ্যক সড়ক দূর্ঘটনা ও প্রানহানীতে উদ্বিগ্ন যাত্রীরা। জানাগেছে বেনাপোল স্থলবন্দরের সাথে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগের স্বল্প দূরত্বের সহজতম এই রুটটি বিগত প্রায় তিন চার বসর যাবত পরিবহন সেক্টরের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। খুলনা বা মাগুরা হয়ে নিয়মিত যাতায়ত পথের দুরত্ব এড়াতে অধিকাংশ পরিবহনগুলো তুলনামূলক এই পথটিকে বেছে নেয়ার কারনে হঠাত করেই অতি ব্যস্ততম হয়ে উঠে এই সড়কটি। অবকাঠামোগত দিক থেকে যশোর-নড়াইল সড়কটি মূলতঃ আঞ্চলিক সড়কের সমমানের হলেও সড়কটিতে বিপুল সংখ্যক অযান্ত্রিক যান সহ ভারী ও দ্রুতগ্রামী পরিবহন চলাচল করছে নিয়মিত, যাতে করে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হচ্ছেনা অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দূর্ঘটনা।

কালনা সেতু উন্মুক্ত হবার পরথেকে অতি সংকীর্ণ, আঁকাবাকা ও অনিরাপদ এই সড়কে স্থানীয় অযান্ত্রিক বা ধীরগতির যানবাহনের পাশাপাশি দুরপাল্লার ভারী ও দ্রুততম যানবাহন চলায় মুখোমুখি সংঘর্ষ বা পরিবহনের নিয়ন্ত্রন হারাচ্ছিলো হরদম। চাহিদানুযায়ী সড়কের আকার, মান ও ধারণক্ষমতা, ব্যবস্থাপনা বা ধারণক্ষমতা অনুযায়ী প্রশস্তকরন বা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না থাকাতে নিরবে নিভৃত্বেই প্রায়শই সড়কে প্রান হারানো সহ অঙ্গহানীর মত মর্মান্তিক পরিনতির শিকার হচ্ছে বিপুল সংখ্যক যাত্রী বা পথচারী। তবে সম্প্রতি যশোর নড়াইল সড়কটি প্রশস্ত করার কাজ প্রায় শেষের পথে। ৩৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কটি মহাসড়কের আওতাভুক্ত করে অধিকাংশই প্রশস্ত করা হয়েছে, তবে সড়ক ব্যবস্থাপনার বেশ কিছু কাজ এখনো চলমান হলেও সড়ক বিভাগের দাপ্তরিক ধীরগতিতে অতিষ্ট এলাকাবাসী।
হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সড়কের আকার বা ক্ষমতার তুলনায় দশ থেকে পনেরগুন বেশী যানবাহন চলা সহ সড়কে পৃথক লেন না থাকা, একই সড়কে ধীর ও দ্রুতগতির যানবাহন চলা, বাজার এলাকাতে গতিনিয়ন্ত্রক না থাকা সহ, পথচারীদের অসতর্কতা, কিছু চালকদের খামখেয়ালী বেপরোয়া গতির কারনে এসব দূর্ঘনটা ঘটে থাকে। হাইওয়ে পুলিশ আইন মেনে সড়কে চলার বিষয়ে কঠোর নজরদারী রেখেছে, তবে এসব দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সড়ক প্রশ্বস্তকরণ, পৃথক লেনের ব্যবহার সহ অবকাঠামোগত কার্যকরী প্রকল্প সম্পন্ন করতে হবে।
নিরাপদ সড়ক সংশ্লিস্ট কয়েকটি সংগঠনের কর্মীদের সাথে কথা বললে তারাও তাদের আশঙ্কার বিষয়টি স্পষ্ট করে অতি দ্রুত সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সমাপ্তি ও হাইওয়ে পুলিশের তদারকি বৃদ্ধির বিষয়ে তাগিদ দেন। একইসাথে মহাসড়কে অযান্ত্রিক বা অবৈধযান নিয়ন্ত্রনে হাইওয়ে পুলিশের উদাসিনতা ও বিচ্ছিন্ন চাঁদাবাজী বন্ধ করে কঠোর হতে আহবান জানান।

