ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘আগুনকন্যা’ পরীমনির বেপরোয়া জীবন, পর্দার আলো আর বিতর্কের অন্ধকার।
প্রতি প্রহর বিনোদন ডেস্কঃ
খুলনার সাতক্ষীরায় জন্ম নেওয়া শামসুন্নাহার স্মৃতি থেকে রূপালী পর্দার ঝলমলে পরীমনি হয়ে ওঠাটা ছিল যেন এক ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলা রূপকথা, যেখানে শৈশবে মা-বাবাকে হারানোর বেদনা নিয়ে বড় হওয়া মেয়েটির চোখে ছিল আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন; মডেলিং ও ছোট পর্দা পেরিয়ে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে একসঙ্গে ডজনখানেক ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি মিডিয়া জগতে পা রাখেন, যা তাকে রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে এবং ‘স্বপ্নজাল’, ‘রানা প্লাজা’র মতো কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি নিজের জাত চেনান, এমনকি একবার ফোর্বস এশিয়ার প্রভাবশালী তরুণ তারকার তালিকাতেও জায়গা করে নেন।

কিন্তু পর্দার এই সাফল্যের চেয়েও অনেক বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করে তার বেপরোয়া জীবনযাপন, যার মধ্যে ছিল বিলাসবহুল পার্টিতে নিয়মিত উপস্থিতি, একাধিক দ্রুত সম্পর্ক ও বিয়ে, এবং অঢেল সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে রহস্য – এ সবই যেন তাকে এক লাস্যময়ী অথচ রহস্যময়ী ‘গ্ল্যামার গার্ল’-এর তকমা এনে দেয়। এরপর আসে সেই ভয়ঙ্কর মোড়, যখন ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, পরে পাল্টা মাদক-কাণ্ডে তার গ্রেপ্তার ও জেলজীবন—এসবই নায়িকাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার চরম শিখরে নিয়ে যায় এবং মিডিয়া জগতের অভ্যন্তরের অন্ধকার দিক, ক্ষমতাবানদের সঙ্গে তারকাদের সখ্যতা ও নৈতিক স্খলনের বিষয়গুলো জনসমক্ষে চলে আসে।
তবে আদালতের রায়ে জামিন পেয়ে পরীমনি যেন আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন, ব্যক্তিগত জীবনে শরিফুল রাজের সাথে প্রেম-বিয়ে-সন্তানের জন্ম দিয়ে আপাতত সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দুই সন্তানকে নিয়ে নিজের সংসার ও ক্যারিয়ারকে নতুন করে সাজানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, যেখানে তার অতীতের বেপরোয়া দিনগুলির পরিনতি যেন তাকে নতুন করে জীবনের অর্থ বুঝতে শিখিয়েছে এবং এখন তিনি বিতর্ক ছাপিয়ে একজন দায়িত্বশীল মা ও অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর।

